
সংগ্রাম দত্ত:
এডভোকেট মনোরঞ্জন ধর। একজন বাঙ্গালী রাজনীতিবিদ, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা,নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর একজন ঘনিষ্ঠ সহকর্মী।
পাকিস্তান জাতীয় কংগ্রেস দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক,একজন অবহেলিত ভাষা সৈনিক,পুর্ব পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী,বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা, মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা,স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাপানের রাষ্টদুত,বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী,একজন সমাজসেবক,একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ।
১৯০৪ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি থানার মানিককালি রেল ষ্টেশনের সন্নিকটে চাতাল গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন।
১৯১৭ সালে অরবিন্দু ঘোষের যুগান্তর দলে যোগ দেন।
১৯২১ সালে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন।
১৯২৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এ পাশ করেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এল এল বি ডিগ্রী অর্জন করেন।
১৯২৮ সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক ছাত্র সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৩০ সালে চট্রগ্রামে মাষ্টারদা সুর্যসেনের সাথে অস্ত্রাগার লুন্ঠনে অংশ গ্রহন করেন।
১৯৩৮ সালে সাপ্তাহিক গন অভিযান পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে পত্রিকা বের করেন।
১৯৪০ সালে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু সঙ্গে হলওয়েল মনুমেন্ট অপসারণ আন্দোলনে অংশ নিয়ে গ্রেফতার হন।
১৯৪৬ সালে জেল থেকে মুক্তি পান।
১৯৪৬ সালে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি আসন থেকে কংগ্রেস থেকে বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৪৭ সালে পুর্ব বাংলায় মহাত্মগান্ধীর শান্তি মিশনের সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৪৭ সালে ১৪ আগষ্ট পাকিস্তান সৃষ্টি হলে সমগ্র পাকিস্তানের কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৫০ সালের শুরুতে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলায় রাজনীতিতে পঞ্চপান্ডব বলা হতো। এই পঞ্চপান্ডব হলেন এডভোকেট মনোরঞ্জন ধর,নুরুল আমিন,আবুল মনসুর আহমেদ,সৈয়দ আব্দুস সুলতান,মোনায়েম খানকে।
১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে কারাভোগ করেন।
১৯৫৪ সালে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী আসন থেকে পুর্ব পাকিস্তান পার্লামেন্টের মেম্বার নির্বাচিত হন।
১৯৫৬ সালে পুর্ব পাকিস্তান সরকারের অর্থমন্ত্রী হন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন এবং মুজিব নগর সরকারের উপদেষ্টা হন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী,সিদ্ধার্থ শংকর রায়, প্রনব মুখার্জী,ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী শচীন্দ্রলাল সিংহের সাথে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখতেন।
১৯৭২ সালে জাপানে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রদুত নিযুক্ত হন।
১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় এম পি নির্বাচিত হন।
১৯৭৩ সালের ১৬ মার্চ বাংলাদেশ সরকারের আইন মন্ত্রী নিযুক্ত হন।
১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ার এক্ট এবং ৪ র্থ সংশোধনী বাকশাল এডভোকেট মনোরঞ্জন ধরের লেখা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর খন্দকার মোশতাক অসুস্থ এডভোকেট মনোরঞ্জন ধরকে জোর পুর্বক আইনমন্ত্রী করেন। খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রী সভায় মন্ত্রী হবার কারনে এডভোকেট মনোরঞ্জন ধর একজন নিন্দিত ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত হন। যার জন্য মনোরঞ্জন ধরের নাম ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
১৯৭৫ সালের ৬ নভেম্বর পর্যন্ত এডভোকেট মনোরঞ্জন ধর আইনমন্ত্রী ছিলেন।
১৯৭৯ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এডভোকেট মনোরঞ্জন ধর কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হয়ে এমপি নির্বাচন করলে বিএনপির আনিসুজ্জামান খোকনের কাছে পরাজিত হন।
২০০০ সালের ২২ জুন বাংলাদেশের রাজনীতির প্রবাদ পুরুষ এডভোকেট মনোরঞ্জন ধর ময়মনসিংহ শহরের নিজ বাসায় মৃত্যুবরন করেন।
পল্লী উন্নয়ন ও জনকল্যানকর বহু কর্মকান্ডে অংশ গ্রহন করেন।সমাজসেবায় অনেক অবদান রেখেছেন।
এডভোকেট মনোরঞ্জন ধর না পেলেন একুশে পদক, না পেলেন স্বাধীনতা পদক।
0 Comments