মুসলমানরা প্রায় ৭০০ বছর ভারতবর্ষ শাসন করেছে। এই ৭০০ বছরে ভারতবাসী কি পেয়েছে তাদের কাছ থেকে অথবা কি হারিয়েছে তার ইতিহাস বড়ই জটিল। তারা ভারতীয় সম্পদ লুন্টন করেছে। ভারতবাসীকে জ্ঞান শূন্য করার সব ধরণের চেষ্টা চালিয়েছে। বর্ণ প্রথার সুযোগ নিয়ে ঐ আমলে গরিব ভারতবাসীকে জোরপূর্বক ব্রেনওশের মাধ্যমে ধর্মান্তর করেছে। আর হিন্দু মন্দিরগুলো ভেঙে মসজিদ, দরগা, মাজার, ইসলামিক সেন্টার ইত্যাদিতে রূপান্তর করেছে।
শুধু হিন্দু মন্দির নয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠা যেমন বিশ্বের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় নালন্দাসহ অনেক লাইব্রেরি, শিখমন্দির, বৌদ্ধ মন্দির, জৈন মন্দির ভাঙা বা পোড়ানো হয়েছে মুসলমান শাসকদের দ্বারা।তারা ভারতীয় উপমহাদেশের হাজার হাজার মন্দির ধ্বংস করেছে। কিন্তু আজ তুলে ধরবো ভারতীয় উপমহাদেশের ১০টি বৃহৎ এবং জনপ্রিয় মন্দির যা মুসলমান শাসকরা ধ্বংস করেছে।
১. মার্তন সূর্য মন্দির, কাশ্মীর
শুধু হিন্দু মন্দির নয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠা যেমন বিশ্বের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় নালন্দাসহ অনেক লাইব্রেরি, শিখমন্দির, বৌদ্ধ মন্দির, জৈন মন্দির ভাঙা বা পোড়ানো হয়েছে মুসলমান শাসকদের দ্বারা।তারা ভারতীয় উপমহাদেশের হাজার হাজার মন্দির ধ্বংস করেছে। কিন্তু আজ তুলে ধরবো ভারতীয় উপমহাদেশের ১০টি বৃহৎ এবং জনপ্রিয় মন্দির যা মুসলমান শাসকরা ধ্বংস করেছে।
১. মার্তন সূর্য মন্দির, কাশ্মীর
কাশ্মীরের এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন রাজা লতিত আদিত্য খ্রিস্ট পূর্ব পাঁচ শতকে। মন্দিরটি ধ্বংস করেন মুসলিম শাসক সিকান্দার বশিখান। শোনা যায় মন্দিরটি এতো মজবুত ছিল যে এটি ধ্বংশ করতে ১ মাসেরও বেশি সময় লাগে। বলিউড মুভি হায়দার নির্মিত হয় এই মন্দিরের উপর ভিত্তি করে। এই মন্দিরকে এখন কাশ্মীরের মুসলমানরা শয়তানের গুহা বলে অভিহিত করে। এই মন্দির আর পুনঃনির্মাণ সম্ভব হয়নি।
২. মধ্যেরা সূর্য মন্দির
এই মন্দিরটি খ্রিস্টপূর্ব দশ শতকে। এই মন্দিরে ছিল ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতার মতো সাতটি কুন্ড জেক সপ্তকুণ্ড বলা হতো। রাজা ভীম্মদেব ১১ শতকে মন্দিরটি পুনঃনির্মান করেন এবং সূর্য দেবতাকে উৎসর্গ করেন। এই মন্দির রামায়ণের সাথে জড়িত। ধারণা করা হয় ভগবান রাম রাবণকে হত্যার আগে এই মন্দিরে এসেছিলেন। পূরণের মতে, এই অঞ্চলকে ঐ সময় ধর্মারণ্য বলা হতো। পরে এটি মধ্যেরা নাম পরিচিতি পায়। মন্দিরটি ছিল স্বর্ণের তৈরী বিভিন্ন দেবদেবতার প্রতিমায় পরিপূর্ণ। মাহমুদ গজনী এখানকার সব স্বর্ণ প্রতিমা লুট করে নিয়ে যায়।পরে আলাউদ্দিন খলজী মন্দিরটি ধ্বংস করেন। মন্দিরটি বর্তমানে পুননির্মাণ করা হয়েছে।
৩. সোমনাথ মন্দির
সোমনাথ মন্দির গুজরাটের পশ্চিমে সুরাটে অবস্থিত একটি শিব মন্দির। এটি বর্তমানে গুজরাটের একটি প্রধান ট্যুরিস্ট আকর্ষণ।১০২৬ খ্রিস্টাব্দে মাহমুদ গজনী মন্দিরটি লুট করেন। পরে আলাউদ্দিন খিলজীর সামরিক কমান্ডার আফজাল খান মন্দিরটি ধ্বংশ করেন। এর পর আওরঙ্গজেব মন্দিরটি ধ্বংস করে প্রায় ধূলার সাথে মিলিয়ে দেন। ইতিহাসবিদদের মতে সোমনাথ মন্দির মোট ১৭ বার লুট ও ধ্বংস করা হয়েছে।তাদের মতে মন্দিরটি ধ্বংস ও লুটের সময় বড় ধরণের হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। ভারতের স্বাধীনতার পর মন্দিরটি পুনঃনির্মাণের প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়। ১৯৫১ সালে বল্লভভাই প্যাটেলের নির্দেশ ও তত্ত্ববোধনে মন্দিরটি পুননির্মাণ করা হয়।
৪. শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির
শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দিরটিকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমি বলে ধারণা করা হয়। এটি ভারতের উত্তর প্রদেশের পবিত্র মথুরা শহরে অবস্থিত। গুজরাটের দ্বারকা মন্দিরের মতো শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দিরটি নির্মাণ করেন শ্রীকৃষ্ণের নাতি বজ্রা (Vajra)। কিংবদন্তীদের মতে কৃষ্ণের জন্মস্থানে মন্দিরটি ৫,০০০ পূর্বে নির্মাণ করা হয়।রাজা যাদবকে এই মন্দির নির্মাণের কৃতিত্ব দিলেও রাজা চন্দ্রগুপ্ত (দ্বিতীয়) এই ৪০০ খ্রিস্টাব্দে এই মন্দিরের অনেক সংস্কার করেন।
১০১৭ খ্রিষ্টাব্দে মন্দিরটি ধ্বংসের পর রাজা বীর সিং বুন্দেলা মন্দিরটি পুনঃনির্মান করেন।
৫. হাম্পি মন্দির
হাম্পি বিজয়নগর সম্রাজ্যের রাজধানী। মুঘল ভারতের আসার আগে বিজয়নর ছিল সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্য। তাদের রাজত্ব ৩৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তারা মুঘলদের কাছে সম্রাজ্য হারান। তাদের পরাজয়ের পর রাজধানীতে এক নাগাড়ে একমাস ধরে বৃষ্টি হয় বলে জানা যায়। হাম্পিসহ বিজয়নগর সাম্রাজ্যের অনেক মন্দির মুঘলদের হাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।
৬. মীনাক্ষী মন্দির
মীনাক্ষী ভারতের সবচেয়ে গুরুত্ত্বপূর্ণ একটি মন্দির। ভারতের তামিলনাড়ুর মাদুরাই শহরে মন্দিরটি অবস্থিত। মন্দিরটি সুন্দরেশ্বর অথাৎ মহাদেব শিব এবং মীনাক্ষী অর্থাৎ পার্বতীকে উৎসর্গ করা হয়েছে। ইতিহাসবিদদের মোতে মহাদেব শিব এই মন্দিরেই পার্বতীকে বিয়ে করেন। তামিল সাহিত্য থেকে মন্দিরটি ৪০০ খ্রিস্টপূর্বে নির্মিত বলে ধারণা পাওয়া যায়। ১৩০০ সালের দিকে দিল্লীর সুলতানদের নজর পড়ে দক্ষিণ ভারতের দিকে। ১৩১০-১৩১১ সালে আলাউদ্দিন খলজির সামরিক জেনারেল মালিক কাফুর মন্দিরটি ধ্বংস ও লুট করেন। ১৬ ০ ১৭ শতকে হিন্দু শাসক বিশ্বনাথ নায়ক মন্দিরটি প্রথম পুনঃনির্মান করেন। এর পর এই মন্দিরের অনেক বার সংস্কার করা হয়। সুন্দর কারুকার্য্যের জন্য মীনাক্ষী মন্দিরকে বিশ্বের সবচেয়ে সুদর্শন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বলা হয়ে থাকে।
৭. মদনমোহন মন্দির
মদনমোহন মন্দির বৃন্দাবনের নিকট কালীঘাটে অবস্থিত। প্রাচীনকালে এই মন্দির এলাকা ঘন বনে পরিবেষ্টিত ছিল। আওরঙ্গজেবের আমলে এই মন্দিরের মদন গোপাল প্রতিমাটি লুট করে রাজস্থানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং মন্দিরটি ধ্বংশ করা হয়। ১৮১৯ সালে একজন বাঙালি শ্রী নন্দ কুমার বসু এর পাশেই ঠিক মদনমোহনের মতো করে আর একটি মন্দির স্থাপন করেন।
৮. শ্রীরাম জন্মভূমি মন্দির অযোধ্যা
স্থানীয় হিন্দুদের মতে, রাম জন্মভূমি ধ্বংশ করে সম্রাট বাবর ১৫২৮ সালে বাবরী মসজিদ নির্মাণ করেন। মীর বাকী যিনি ছিলেন সম্রাট বাবরের সামরিক জেনারেল তিনি রামজন্মভূমি ধ্বংশের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলে ইতিহাস থেকে ধারণা পাওয়া যায়। ধ্বংসের পর থেকে এখানে হিন্দু-মুসলিম উভয়ই প্রার্থনা করে আসছিলো। মুসলমানরা মসজিদের ভিতর এবং হিন্দুরা মসজিদের বাইরে প্রার্থনা করে আসছিলো। রামজন্মভুমিতে ভগবান রামের মন্দির নির্মাণের লক্ষ্যে হিন্দুরা '৯০ এর দিকে বাবরী মসজিদ ধ্বংস করে। এখানে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্যে ভারতীয় আদালতে এখনো মামলা চলছে।
৯. কাশি বিশ্বনাথ মন্দির, বেনারসী।
১০. রুদ্র মহালয়
এটি গুজরাটের পাঠান জেলার সিদ্দিপুরে অবস্থিত একটি মন্দির কমপ্লেক্স। সিদ্দিপুর সরস্বতী নদীর তীরে অবস্থিত হিন্দুদের একটি প্রাচীন পবিত্র শহর।গুজরাটের রাজা সিদ্ধি মহারাজ থেকে এই শহরের নামকরণ হয়েছে। সিদ্ধি মহারাজ ১২০০ সালের দিকে মন্দিরটি নির্মাণ করেন। প্রকৃতপক্ষে, মুলারাজা সোলাঙ্কি ৯৪৩ সালে রুদ্র মহালয় মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন এবং ১১৪০ সালে সিদ্ধিরাজ জয়সিংহ তা শেষ করেন। ১৪১০ থেকে ১৪৪০ সালের মধ্যে আলাউদ্দিন খিলজি মন্দিরটি কয়েকবার ধ্বংস করেন। আবার পুনঃনির্মান করা হলে আহমেদ শাহ সেটি সম্পূর্ণ ধ্বংস করে সেখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। সংগৃহিত
0 Comments