
একদিন ভগবান শংকর স্নান করার জন্য কৈলাস থেকে ভাগবতী নামক স্থানে স্নান করতে গেলেন, ঠিক ওই সময়ে পার্বতী স্নান করতে করতে করতে নিজের তন্ এর মিলনে একটি পুঁতলি বানালেন। ও তার নাম রাখলেন গণেশ।
পার্বতী গনেশকে বললেন- হে পুত্র! তুমি একটা মুদ্রা নিয়ে, দরজার ওইখানে গিয়ে, আমার পাহারা দাও। আমি ভিতরে গিয়ে স্নান সম্পন্ন করি। এইটা খেয়াল রাখবে আমি ভিতরে স্নান করছি স্নান সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেবে না।
এইদিকে একটু পরেই পার্বতীর স্নানকালে, দেবাদিদেব মহাদেব আসলেন আজ ঘরের মধ্যে প্রবেশ করার চেষ্টা করলেন ওই সময় গণেশ মহাদেবকে প্রবেশ করতে বাধা দান করলেন।
শিব এতে অপমান বোধ করলেন এবং ক্রোধিত হয়ে গণেশের ধর থেকে মুন্ডচ্ছেদ করে দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেন। ক্রোধিত শিব যখন ভেতরে ঢুকলেন তখন পার্বতী ওনাকে দেখে মনে ভাবলেন হয়তো ভোজনের বিলম্বে ভোলানাথ রেগে আছেন।
এইজন্য তৎক্ষণাৎ পার্বতী দু'থালাতে ভোজন পারস করে খাবারের জন্য ভোলানাথকে নিবেদন করলেন।
দুটো হাতে খাবার দেখে ভোলানাথ পার্বতীকে জিজ্ঞাসা করিলেন- হে পার্বতী! এই দ্বিতীয় থালায় ভোজন কার জন্য পারস্ করেছো?'
তদুত্তরে পার্বতী বলিলেন- হে ভোলানাথ! এই দ্বিতীয় থালাটি আমার পুত্র গণেশের জন্য, যে বাহিরের দরজায় পাহারা দিচ্ছে।
পার্বতীর মুখে এই কথা শুনে শিব আশ্চর্য হয়ে বললেন, "তোমার পুত্র বাহিরে পাহারা দিচ্ছে? কিন্তু আমিতো আমাকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেয়ার জন্য ওর ধর থেকে মাথা আলাদা করে দিয়ে ওর জীবনলীলা সমাপ্ত করে দিয়েছি।
এই কথা শুনে পার্বতী দারুণ দুঃখ পেয়ে শিবের সঙ্গে বাক্য বিলাপ করতে লাগলেন, উনি ওনার পুত্রের পুনর্জীবনের জন্য শিবের কাছে বারংবার আর্জি জানালেন।
তখন পার্বতীকে সন্তুষ্ট করার জন্য ভোলানাথ একটা বালক হাতির মাথা কেটে নিয়ে এসে বালক গণেশের ধরের সঙ্গে জুড়ে দিলেন।
পার্বতী নিজের পুত্রের জীবন ফিরে পাওয়াতে দারুণ খুশি হলেন। এবার নিজের স্বামী ও পুত্রকে খেতে দিয়ে, নিজেও ভোজন করলেন।
এই ঘটনা ভাদ্রপদ শুক্ল-চতুর্থীতে ঘটেছিল।
এইজন্যই ভাদ্র মাসের এই দিনটাকে আমাদের সনাতন ধর্মে অতি পবিত্র এবং সর্ব কার্যসিদ্ধিদাতা গণেশের নামে সমর্পিত করা আছে।
0 Comments